Posts

Showing posts from January, 2022

প্রলেতারিয়েতকে লেখা মুশফিক বরাতের চিঠি- ৪

গণবিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আন্দোলনে আমাদের যুক্তিগুলো ছিল- বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও ফার্মেসি কাউন্সিলের নিয়মানুযায়ী বাংলাদেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের বিভাগীয় প্রধানকে অবশ্যই ফার্মাসিস্ট হতে হবে। অথচ বিভাগীয় প্রধান মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ ফার্মাসিস্ট না হওয়া সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরে এ পদে বহাল রয়েছেন। দৈনিক যায় যায় দিন-এর সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধির ১৯ আগস্ট ২০০৭- নিউজে আসে, ‘সাভারের নয়ারহাটে অবস্থিত গণবিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি বিভাগের প্রধান মেসবাহ উদ্দিনের অপসারণ দাবিতে ওই বিভাগের দুই শতাধিক ছাত্র গতকাল শনিবার ক্লাস বর্জন, প্রতীকী অনশন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে।’ পেশায় কেমিস্ট মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ ছাত্রদের ওপর বিভিন্ন সময় নানা ধরণের অনৈতিক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে সিনিয়র ফার্মাসিস্ট নিয়োগ না দেয়া, অপেক্ষাকৃত জুনিয়র (পড়াশোনারত) শিক্ষক নিয়োগ, প্রসপেক্টাসে নিয়ম না থাকা সত্ত্বেও অন্যায়ভাবে শিক্ষার্থীদের সেমিস্টার ড্রপের সিদ্ধান্ত দেয়া, প্র্যাকটিকাল ল্যাবে পর্যাপ্ত সুবিধা না দেয়াসহ আরো অনেক অভিযোগ রয়েছে। এখানে বলে রাখা ভালো যে, প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি আমি লিখেছিল

প্রলেতারিয়েতকে লেখা মুশফিক বরাতের চিঠি- ৩

আমার প্রিয় গায়ক কলকাতার জীবনমুখী গায়ক নচিকেতা। গায়ক নচিকেতার প্রায় সব গানগুলো আমার মুখস্থ। তখনো-এখনো। পাশাপাশি কবীর সুমন আর অঞ্জন দত্তের গানও শুনেছি প্রচুর। পড়াশুনায় ফাঁকি দেবার জন্য এগুলো করেই সময় কাটিয়েছি। কলেজের প্রসপেক্টাসে জমা দেয়া কবিতাটি ছিল তিন লাইনের। আমি দুষ্টুমি করেই তিন লাইন দিয়েছিলাম যেন ছাপা হয়। অবশ্য পরে ছাপাও হয়েছিল তবে আমার লিখিত বানানে নয়- ভুল বানানে। সম্ভবত একটা শব্দ (word) ভুল ছিল। আর ছোটগল্প সম্বন্ধে তো কিছু বলতেই হবে। আমি জানতাম, অনেক বড় বড় লেখকের অনেক বড় বড় কর্মের মাঝে ছোট একটা মুন্সিয়ানা ছোটগল্প কোনো অর্থই রাখে না। সেজন্যই অঞ্জন দত্তের পরিচিত গানটাকে ব্যবহার করেছিলাম। গানটার শিরোনাম ছিল- ‘অদ্ভুত ভালো লোকটা......।’ বামপন্থী একজন লোকের ছোট একটা জীবনীমূলক রচনা। যেখানে তার কিছু বৈশিষ্ট্যের দেখা পাওয়া যায়। আমি ঐ গানের বৈশিষ্ট্যগুলো ধরে একটা ছোটগল্প বানিয়ে ফেললাম। স্যারদের অবশ্য তাতে বোকা বানানো যায়নি। কবিতাটি ছাপিয়েছে; ছোটগল্প ছাপায়নি। এই আত্মজীবনীমূলক চিঠিতে আমার রাজনৈতিক জীবনের বর্ণনা খুব সামান্যই আছে। তাই কিছুটা বলে রাখা ভালো। আমার রাজনৈতিক জীবনের পুরোটাই কমিউনিস্

প্রলেতারিয়েতকে লেখা মুশফিক বরাতের চিঠি- ২

স্কুলের পাঠ চুকিয়ে আমি ভর্তি হলাম সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এ্যান্ড কলেজে যেটি বাংলাদেশের নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর থানায় অবস্থিত। আমাদের সময় অবশ্য সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কেউ প্রিন্সিপালের দায়িত্বে ছিলেন না। আমি কলেজ থেকে বেরিয়ে যাবার অনেক দিন পরে অবশ্য শুনতে পাই যে, সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ ব্যক্তিরা ধারাবাহিকভাবে প্রিন্সিপালের দায়িত্ব পালন করছেন। আমি অবশ্য পড়াশুনোয় কখনোই অমনোযোগী ছিলাম না। সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকারা ছিলেন সবাই ‘অতিরিক্ত মেধাবী’। ‘অতিরিক্ত মেধাবী’ বললাম এ কারণেই যে- তাদের মধ্যে কেউ ছিলেন বাংলাদেশের সবচে’ বড় আয়তনের বিশ্ববিদ্যালয় ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়’-এর ফ্যাকাল্টি ফার্স্ট (অর্থাৎ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সবগুলো বিষয়ে সবার মধ্যে ফার্স্ট), আবার কেউ ছিলেন বাংলাদেশের একটি পুরো বিভাগ অর্থাৎ রাজশাহী বিভাগের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক- আবার কেউ ছিলেন ছাত্রাবস্থায় গোল্ড মেডেলিস্ট। সৈয়দপুর ক্যান্ট পাবলিক কলেজে পড়ার সময় পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে যেমন চলতো আমার ‘কবিতা চর্চা’; তেমনি চলছিল বাংলাদেশের মার্কসবাদী লেখকদের বইগুলো নিয়ে ঘাটাঘাটি। বাংলাদেশের মার্কসবা

প্রলেতারিয়েতকে লেখা মুশফিক বরাতের চিঠি- ১

মুশফিক বরাত আমার নাম। বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলায় আমার জন্ম। বাবা-মায়ের সন্তান বলতে আমি একমাত্র; ভাই-বোন নেই। বাবা আজীবন কমিউনিস্ট রাজনীতির সাথে জড়িত। মা-ও বাবার রাজনীতিতে সহযোগিতা করতেন। যদিও ছিলেন প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা (বর্তমানে প্রধান শিক্ষিকা)। মা চাকুরি করতেন প্রথম জীবনে পার্বতীপুর উপজেলার দক্ষিণ বিষ্ণুপুর গ্রামের এক প্রাইমারি স্কুলে। পরবর্তীতে বদলী হয়ে আসেন পার্বতীপুর উপজেলার রিয়াজনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। আমি প্রথমে ভর্তি হয়েছিলাম আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। যেটা ছিল আমার নানীর তৈরি করা স্কুল। স্কুলটি প্রতিষ্ঠায় সর্বাধিক ভূমিকা রেখেছিলেন আমার নানী। ১৯৯১ সালে আমি ভর্তি হই আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ও পরবর্তীতে ভর্তি হওয়া রিয়াজনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হবার পরের দুই বছর আমি তেমন বুঝতাম না। আমি ভালোভাবে বুঝতে শুরু করলাম ১৯৯৩ সাল থেকে। এরপর থেকেই আমি প্রতিটি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করতে শুরু করলাম। বাংলাদেশের প্রাইমারি পঠনপদ্ধতি অনুযায়ী তৈরি হওয়া শিক্ষা ব্যবস্থায় তৃতীয় শ্রেণি থেকে শুরু করে পঞ্চম শ্রে

নিদ্রিতার নিঃসঙ্গতা ------- মুশফিক বরাত

নিদ্রিতা পথ চলছে একাকী জনহীন রাস্তায় হাঁটছে আপন মনে, কোমল শরীর দুলিয়ে এগিয়ে কিছুটা টিউলিপের গন্ধ প্রত‍্যাশায় শিরশীর্ষ উঁচু- পথ এলোমেলো এদিক-সেদিক ছড়িয়ে রয়েছে বালুকণা। একটা ফুলের বাগান, নির্জন নিঃসঙ্গতায় পূর্ণ গন্ধ চেয়ে নিয়েছে সহসাই এক সাহসী যুবক। চতুর কুকুরের দল পিছু নিয়েছে যেন পথ আগলে ধরেছে বখাটেরা। উষ্ণ পুরুষটির দীর্ঘ গ্রীবায় হাত রাখোনি যদিও বুকের পাঁজরে ভুলোনি সাহসী যুবকটির বেদনাও বলোনি- হেঁটেছি, নিঃসঙ্গ হেঁটেছি সঙ্গীহীন এগিয়ে এসেছে শহুরে লাল শিয়ালের জুটি এগিয়ে এসেছে জনৈক প্রৌঢ় বৃদ্ধ। সাহসী মন নিয়ে কেঁপে উঠেছ কখনো নিভৃত লোকালয়ে উদয় খুঁজেছ কখনো। উদিত হয়েছে সূর্য উদিত হয়েছে চন্দ্র জানান দিয়ে গেছে কেঁপে কেঁপে ধ্রুবতারা। গন্ধ শুঁকেছো রজনীগন্ধার পরশ নিয়েছো রক্তজবার ভেসেছ সুখস্বপ্নে সুখরামের- এসেছে আরেকটি সুবর্ণ দিন। নিঃসঙ্গতায় কাটছে কি আজকাল? বেদনায় নীল হয়েছ কি দিনময়? জেনেছ কি! আমিও ঘুমাইনা আজকাল দুঃস্বপ্নের ঘোরে চেয়ে থাকিনা দীর্ঘ প্রতীক্ষায়- ভাবি নষ্ট আবেগে নিদ্রিতার কোমলতায়। এমনি কোনো এক সকালে ডেকে উঠব আচমকা- আমি তোমার সঙ্গী হব।

নিদ্রিতা, তোমার জন‍্যে ---- মুশফিক বরাত

১. দেহগহ্বরের ভেতরে তুমি, বাইরে আমি অনেক মাস হলো- অনেক বছর হলো তোমাকে দেখিনা। নিদ্রিতা আসছে, আসছে নিদ্রিতা: প্রিয় শহরে- আমারই প্রিয় শহরে শিউলি ভেজা সকালে। তাই চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে এক নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।একদিন গভীর নিম্নচাপে আমিও ডুবে মরবো। একবিন্দু ভোরের শিশির কখনো চোখে ভাসবে কি? কখনো অশ্রু হয়ে গড়াবে কি? কখনো- একজন জুয়াড়ি খেলে চলছে অবিরাম তার সর্বস্ব খুইয়ে পথ চেয়ে রইলো রাস্তায়; তুমি তাকে ফেরাতে পারবে কি? আমি হলেও পারতাম না কোনো ফর্সা সুন্দরী নারীকে ললিতার মর্যাদা না দিতে- ভুলে গিয়েছো তোমার স্নেহবান পিতার কথা যে তোমাকে আমার কাছে আসতে বলেছিল ভাসতে বলেছিল কাঁদতে বলেছিল; আমি তোমাকে হারাবো ব'লে তাও বলতে পারিনি। নিদ্রিতা এখনো কত আঁধার-রাত্রি জুড়ে তোমার নিয়ত বিচরণ স্বপ্নে- আহ্লাদে- আবদারে আমাকে ভুলো না কখনো আমাকে ভুলো না কখনো। ২. রিকশায় উঠেছিলাম সেদিন দুজনে। তারপর যেতে যেতে দশ মিনিট- অতঃপর একটি সিগারেট ; ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে তোমার সাথে প্রেমালাপ। এগিয়ে দিয়েছিলাম স্টেশন

এবং নিদ্রিতা --- মুশফিক বরাত

বন্ধুরা বলে তুমি আছো, তুমি নেই প্রতিবেশীরা বলে তুমি আছো, তুমি নেই। মাথায় ঘোমটা দিয়ে আসবে ব'লে ভাবছিলাম তোমার কথা দিনমন ভাবছিলাম- সারারাত ধরে ভাবছিলাম। কাউকে খুঁজছি।খুঁজছিলাম প্রাণান্ত প্রচেষ্টায় যে ছিল চির অপেক্ষায়। ওড়না দুলিয়ে এগিয়ে গেল বেশ কিছুটা পথ; তার হাসি ভুবন ভোলানো, তার চাহনি হৃদয় কাঁপানো শৈশবে কখনো থমকে দাঁড়ায় যে, আহা!কি বলি, এমনই সে যে আমার অন্তর-বাহিরে দীর্ঘ পদধূলি মাথায় ঘোমটা দিয়ে আসবে ব'লে- ভাবছিলাম নিদ্রিতার কথা ভাবছিলাম- সারারাত ধরে ভাবছিলাম। ঘোমটা ঈষৎ সরিয়ে ভুবন ভুলিয়েছিল বন্ধুরা বলে তুমি আছো, তুমি নেই। প্রতিবেশীরা বলে তুমি আছো, তুমি নেই। নীল নৌকো চালিয়ে শাদা কামিজে যে চোখের সাগরে মাতিয়ে রেখেছিল যে শাদা ওড়নাটা চেয়ে নিয়েছিল আমি বলেছিলাম- আবার দেখা হবে।

নিদ্রিতা, তোমার জন‍্যে ---- মুশফিক বরাত

দেহগহ্বরের ভেতরে তুমি, বাইরে আমি অনেক মাস হলো- অনেক বছর হলো তোমাকে দেখিনা। নিদ্রিতা আসছে, আসছে নিদ্রিতা: প্রিয় শহরে- আমারই প্রিয় শহরে শিউলি ভেজা সকালে। তাই চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে এক নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।একদিন গভীর নিম্নচাপে আমিও ডুবে মরবো। একবিন্দু ভোরের শিশির কখনো চোখে ভাসবে কি? কখনো অশ্রু হয়ে গড়াবে কি? কখনো- একজন জুয়াড়ি খেলে চলছে অবিরাম তার সর্বস্ব খুইয়ে পথ চেয়ে রইলো রাস্তায়; তুমি তাকে ফেরাতে পারবে কি? আমি হলেও পারতাম না কোনো ফর্সা সুন্দরী নারীকে ললিতার মর্যাদা না দিতে- ভুলে গিয়েছো তোমার স্নেহবান পিতার কথা যে তোমাকে আমার কাছে আসতে বলেছিল ভাসতে বলেছিল কাঁদতে বলেছিল; আমি তোমাকে হারাবো ব'লে তাও বলতে পারিনি। নিদ্রিতা এখনো কত আঁধার-রাত্রি জুড়ে তোমার নিয়ত বিচরণ স্বপ্নে- আহ্লাদে- আবদারে আমাকে ভুলো না কখনো আমাকে ভুলো না কখনো।

অশ্রুসিক্ত নিদ্রিতা ----- মুশফিক বরাত

রিকশায় উঠেছিলাম সেদিন দুজনে। তারপর যেতে যেতে দশ মিনিট- অতঃপর একটি সিগারেট ; ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে তোমার সাথে প্রেমালাপ। এগিয়ে দিয়েছিলাম স্টেশন পর্যন্ত।তুমি বলেছিলে, দীর্ঘশ্বাস কবিদের খুব পছন্দ।আমি বলেছিলাম, সমুদ্র হতে পারবো।তুমি বলেছিলে- আমার চোখে হিমালয়।আমি বলেছিলাম, অতটা নয়।শুধুমাত্র পাহাড়ি ঝর্ণা। ট্রেনে বসে একটা পদ্মফুলের আবদার করেছিলে।আমি বললাম, তাও ব্রক্ষ্মার অনুকূলে। ----------- কী হতে পারতো পরের চাওয়াটাও? হতে পারতো তা একটি রজনীগন্ধা!হতে পারতো তা একটি রক্তজবা!ট্রেনের শেষ স্টেশনে তোমার শেষ চাওয়াটা ছিল একটি রক্তগোলাপ।আমি দিয়েছিলাম কিনা সেটা ব্রক্ষ্মারও জ্ঞাত নয়।শেষ জার্নিটুকু ছিল ট‍্যাক্সিক‍্যাবে।যেতে যেতে প‍্রশ্ন ছুঁড়েছিলাম, ইয়ু গাছের মতো আমাকে ভালোবাসতে পারবে?হয়ে উঠবে না তো মিসলটোর মতো দুর্লভ। অশ্রুসিক্ত নিদ‍্রিতা।