অভিলাষ মাহমুদের পদ্য

 অভিলাষ মাহমুদের  পদ্য

১ 

মুখচ্ছদ

অ- অকালে জন্মে অকালেই গেছি আমি পেকে,

অনেক দেখেছি, শিখেছি অপরের কাছে ঠেকে।

ভি- ভিড় দেখলেই মনের ঘরে ঢুকতো যেনো ভয়,

শুধু ভাবতাম ভয়ে কেঁপে কেঁপে কখন কী না জানি হয়।

লা- লাল রঙ হাতে নিলেই মনে হতো এই বুঝি পিছু নিলো ষাড়,

বারবার দেখতাম তাই পিছু ফিরিয়ে আপন ঘাড়।

ষ- ষণ্ড হয়েছি ঢের বহু আগে, পারিনি পাষণ্ড হতে,

লোক সমাগম দেখলেই পালিয়ে বেড়াতাম কোনো মতে।

মা- মানুষকে ভালোবাসি, আমার ঘৃণা শুধু অমানুষের প্রতি,

কিছু মানুষ বুঝেন না বা বুঝতে চান না কী আমার ব্রতি?


হ- হরতকি বা চিরতার জল ভাবে আমায় কেউ কেউ,

মানুষরূপী কিছু কুকুর আমাকে দেখলেই করে ঘেউ ঘেউ।

মু- “মুখচ্ছদ” এঁটে কখনো কখনো করি সিনেমা কিংবা নাটক,

কিছু লোকে দেখলেই তাই করতে চায় ধাওয়া, পুলিশে করতে চান আটক।

দ- দল করি না, ছল করি না আমি একাকী এক লোক,

আজকে যারা-ই করে হেলা, মরলে আমি তারা-ই করবে পালন শোক।





নিদারুণ অসুখ!

অ- অন্ধকার নামলেই লাটিমের মতো ধরে যাই ঝিম,

ঘুম আসলেই চোখে বুকের ভিতর রাখি উট পাখির ডিম।

ভি- ভিড় দেখলেই খুব লাগে ভয় পাজিরা যে ঠাট্টা করে,

তখন যে যাই অচিন পথে পাগলের বেশ ধরে।


লা- লাটিমের মতো মাটির বুকে ঘুরতে থাকি যেই,

তখন যেনো এই আমিটা আমার ভিতর নেই।

ষ- ষড়যন্ত্র করে আমার সাথে ওরা টিকতে যে না পারে,

কেউ খেলতে চায়লে একটু সুযোগ দেই যে আমি তারে।


মা- মানুষ তো নয়- কিন্তু তারা মানুষের মতো করে ভান,

রাত্রি হলে সাধু সেজে গাজায় মারে টান।

হ- হতে পারিনি সংসারী হতে পারিনি যোগী,

বুঝাতে পারি না এই আমিটা কী নিদারুণ অসুখ ভোগী!

মু- মুদ্রা দোষে কষ্ট যে ভোগী বলবো আমি কাকে?

কা- কা করা কাকগুলো যে সুযোগের আশায় থাকে।

দ- দরদী বন্ধু আছে অনেক তারা পারে না করতে কিছু,

বেদরদী লোক দেখি যে অহেতুক লাফিয়ে বেড়ায় মিছু


৩ 

মুখের মায়া মনের মায়া

অ- অসম্ভবের পায়ে আমি মনো কুড়াল মারি,

আগুনমুখী পতঙ্গও চাইলে আমি হতে পারি।

ভি- ভিন্ন লোকে ভিন্ন চোখে আমার সকল কর্ম দেখে,

কারো থেকে শিখি আমি কেউ আমার থেকেই শেখে।

লা- লাগে না ভালো এতোটা আলো, তাই থাকি আলো আঁধারের মাঝে।

ভুলে আমি সকল ব্যথা পাখির সাথে বলতে কথা বেরিয়ে পড়ি সাঁঝে।

ষ- ষড় ঋতু হারিয়ে গেলো আসবে কি আর ফিরে?

প্রকৃতিকে বাসলে ভালো আসবে আবার ধীরে ধীরে।


মা- মাকাল ফলটা দেখতে সুন্দর কিন্তু খায় না মোটেও কাকে,

সব জায়গাতে সবার মনে এমন ব্যাপার কিছু তো থাকে।


হ- হট্টটি পাখীর মতো আমি ঘুমাই দু পা তুলে,

বিষাদ যন্ত্রণা ভুলে থাকি, যাই না সেই মায়া ভুলে।


মু- মুখের মায়া মনের মায়া যায় যে বুঝা সব,

এখন এই মনটা আমার পুষ্প বিহীন টব।


দ- দ ভঙ্গীতে কাটে আমার অনেক সময় যখন নামে বিষাদ ছায়া,

ভালোবাসার কাঙাল বলেই ছাড়তে পারি না মায়া।

 

৪ 

কাদা মাটির গান


অ- অনাস্থা অপ্রেমে আমার প্রেমে আস্থা খুব,

প্রেম যমুনায় নির্ভাবনসায় তাই দিতে পারি ডুব।


ভি- ভিড় ভাট্টাতে আড্ডা দিতে মন দেয় না সায়,

না চাইলে আমি দিতে ধরা কে আমাকে পায়?


লা- লাভ লোকসানের ধার ধারি না যা ভালো তা করি,

না যাই কাছে ধান্ধাবাজের আন্ধা লোকের হাত ধরি।


ষ- ষণ্ড সেজে ভণ্ডামি যাদের করতে দেখি রোজ,

নানন দেশে নানান বেশে করি তাদের খোঁজ।


মা- মাটির মতো শক্ত আমি কাদার মতোও নরম,

কখনো শীতল মেজাজি আমি কখনো খুব গরম।


হ- হই না শোকে শোকার্ত আমি যদিও চোখে আসে জল,

সবাই কি আর ভাবতে পারে দুর্বল দেহেও থাকে বল?


মু- মুখের উপর মুখোশ পরে করে বেড়াই অভিনয়,

কেউ আমাকে কবি বলে কেউ বলে আমি কবি নয়।

দ- দখলবাজের সকল কাজে দেই যে আমি বাধা,

যদিও দেখতে লাগে আমায় আমি হাদা গাধা।


অসীম পথে …

অ- অসীম পথে হেঁটে গেছি রূপকথার গল্পের ঝুলি নিয়ে কাঁধে,

আমাকে পথ চিনিয়েছিলো পঙ্খিরাজ, দেখেছি গাল্পিকা কতো কী রাঁধে!

ভি- ভিন দেশী রাজকন্যা আমাকে দেখে খুশিতে নেছে গেয়েছিলো গান,

পাহাড়ী ললনারা আমাকে বরণ করে খেতে দিয়েছিলো মিষ্টি পান,

লা- লাল পরী, নীল পরীরা দল বেঁধে এসে,

আমাকে নিয়ে যায় তারা আকাশে মেঘের দেশে।

ষ- ষড়যন্ত্রকারীরা নিপাত যায় আমি যাই জিতে,

আমার সফলতা তারা চায় না মেনে নিতে।

মা- মানুক না মানুক তারা আমার যায় আসে না কিছু,

আজকে যারা অগ্রে লাফায়, কালকে তারা-ই থাকবে পিছু।


হ- হয়েছিলাম সবার মাঝে তামাশার এক পাত্র,

সয়েছিলো অনেক দিন অজস্র যন্ত্রণা আমার সমস্ত গাত্র।

মু- মুখ পুড়া হনুমান সেজে পারি পুড়াতে আমি লঙ্কা,

নাচতে পারি তাক ধিনা ধিন বাজিয়ে বিজয় ডঙ্কা।

দ- দশের সাথে মিলে মিশে দেশকে ভালোবাসবো।

মিলে মিশে গাইবো গান আর খুশির হাওয়ায় ভাসবো।

মায়ার খোয়াবে …

অ- অস্থিরতা আমার ভিতর ছিলো না কখনো, এখনোও নাই,

দেহের রক্ত শীতল ভারী যে যা বলুক রাগ করি না তাই।


ভি- ভিষণ শান্ত মানুষ আমি, ভিষণ ভালো লোক,

প্রতিবাদ তখনই করি শুধু যখনই ওঠে ঝোক।

লা- লাপাত্তা হই মাঝে সাঝে কে দেয় পাত্তা দেখতে,

হয় যে তখন সহজ আমার ভালো মন্দ লেখতে।

ষ- ষড়যন্ত্র করে কে আমাকে চায় যে রুখে দিতে?

চাই না কখনো তার নামটা আমি আমর মুখে নিতে।

মা- মায়ার খোয়াবে কায়ার খারাবি আমি যাই যে করে রোজ,

আমার অসুখ- বিসুখ ভালো মন্দ দেখি কে কে করে খোঁজ?

হ- হয়েছি আমি কারো কারো দুচোখেরি বালি,

মারতে পারে না যারা আমায় দেয় যে তারা গালি।

মু- মুখে মুখে করি না তর্ক চাই না নিচে যেতে নেমে,

তাদের কাছে হার মেনে তখন যাই যে আমি থেমে।

দ- দরদ দেখায় কোন সে মরদ আমার জন্য খুব?

পড়বে সে যে বেশ বিপদে না বুঝে দিলে ডুব।

আবেগী স্মৃতি

অ- অন্ধকার দেখে যদি ভয়ে থমকে যেতাম না পেতাম আলোর দেখা,

ভুল করলে লজ্জা পাবো তা যদি ভাবতাম তবে হতো না আমার শেখা।

ভি- ভিন্ন কিছু ভাবতে না পারলে জানি থেকে যাবে সেই পুরোনো রূপ,

অন্যয়ের প্রতিবাদ করি ঠিকই যদিও থাকি আমি চুপ।

লা- লাল আগুন হাতে নিয়ে দেই পাহারা আমার প্রিয় মা- দেশ,

এই যে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করতে পালন মায়েত সকল আদেশ।

ষ- ষড়যন্ত্রকারীর ষড়যন্ত্র সব আমরা দামাল দেবো ধ্বংস করে,

যেমন যুদ্ধ হয়েছিলো নয় মাস সেই উনিশ শত একাত্তরে।

মা- মায়ের প্রতি ভালোবাসা আর মাটির প্রতি টান,

আবেগ মাখা সেই স্মৃতি ভেবে লিখি কবিতা ছড়া গান।


হ- হয়েছিলো সেই সময়ে বোন- মাতৃকার আব্রু টানা টানি,

সেই আব্রু বাঁচালো মুক্তি বাহিনী সারা বিশ্বে হয়েছিলো জানা জানি।

মু- মুক্তি পাগল দামাল ছেলেরা করেছিলো দেশ স্বাধীন,

সেই খুশিতে তারা তখন উড়িয়ে পতাকা নাচলো ধিনাক না- ধিন।

দ- দখল এখনো করে আছে দেশ তাদের কিছু অংশ,

এসো হে দেশ প্রেমিক সকল করি তাদের ক্ষমতা ধ্বংস।

Comments

Popular posts from this blog

কবিতা এনে দিতে পারে মুক্তি - মুশফিক বরাত

পাও গাড়ি - কমরেড মুশফিক বরাত

তুমি কে? - মুশফিক বরাত